বিদেশি অনুদান কিভাবে পাবো – বিভিন্ন শারিরিক অসুস্থতার কারনে বিদেশি অনুদান থেকে সাহায্য গ্রহণ করা যায়। বিদেশি অনেক সংস্থা রয়েছে যারা বাংলাদেশের দূর্দশাগ্রস্ত লোকেদের অনুদান প্রদান করে। আপনার বা আপনার আশে পাশের কোনো অভাবগ্রস্থ লোকের জন্য বিদেশি অনুদানের প্রয়োজন হয় তাহলে কিভাবে আবেদন করবেন?
বন্ধুরা, আমাদের আজকের আর্টিকেলে সেটাই আলোচনা করবো। বিভিন্ন কারণে আমাদের অনেক সময় বিদেশি অনুদানের আবেদন করা লাগতে পারে। তাই জেনে রাখা ভালো কিভাবে আপনি সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে বিদেশি অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারবেন। বিদেশি অনুদান পেতে কি কি ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হবে বিস্তারিত থাকছে আজকের আর্টিকেলে।
বিদেশি অনুদান কি
সাধারণত বিদেশ থেকে প্রাপ্ত কোনো অনুদান কে বিদেশি অনুদান বলা হয়। বিদেশি অনেক সাহায্য সংস্থা রয়েছে যারা বিশ্বব্যাপি অভাবগ্রস্থ মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ওয়েবসাইট গুলোর মাধ্যমে কেউ যদি অনুদান দিতে ইচ্ছুক হয় তাহলে সরাসরি সেখানে সংস্থার নাম ও তথ্য দেখে যে কেউ বিদেশ থেকে অনুদান পাঠাতে পারে। মূলত বিদেশ থেকে কোনো অনুদান পাওয়াই হলো বিদেশি অনুদান।
বিদেশি অনুদান কিভাবে পাবো
বিদেশি অনুদান অনেক গুলো সাইটের মাধ্যমে আবেদন করার মাধ্যমে পাওয়া যায়। তবে আপনি আপনার ব্যাক্তিগত কারণে এখান থেকে কোনো অনুদান পাবেন না। বিদেশি অনুদান পাওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই সব শর্ত পূরণ করতে হবে। আপনার সকল ডিটেইলস তাদের কে দিতে হবে।
বাংলাদেশ থেকে ইতিমধ্যে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অনেকে বিদেশি অনুদানের জন্য আবেদন করায় অনেক ওয়েবসাইট বাংলাদেশ থেকে আবেদন গ্রহণ করা বন্ধ করে দিয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে আপনি সাহায্য নিতে পারেন যদি বিদেশে আপনার কোনো বন্ধু বা আত্নীয় স্বজন থাকে তাদের মাধ্যমে।
📌 আরো পড়ুন 👇
যদি তারা সেখান থেকে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দেয় আর যাচাই করার পর যদি আপনাকে অনুদান পাওয়ার যোগ্য হিসেবে বিবেচিত করা হয় তাহলেই শুধু মাত্র আপনি বিদেশি অনুদান গ্রহণ করতে পারবেন। বর্তমানে বিদেশি অনুদান পাওয়ার জন্য নিচের সাইট গুলোর মাধ্যমে আপনি আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন –
- Go Found Me
- Charity Navigator
- Air Funding
- Global Giving
ইত্যাদি সাইট গুলোতে ভিজিট করে সকল নিয়ম গুলো ভালো ভাবে পড়ার পরে আপনাকে আবেদন করতে হবে। এখন – প্রশ্ন হলো আবেদন করতে কি কি তথ্যের প্রয়োজন হবে। নিচে আমরা সেটা উল্লেখ্য করে দিলাম –
বিদেশি অনুদান কারা নিতে পারবেন
বিদেশি অনুদান এর আবেদন এর প্রক্রিয়া দেখার পূর্বে জেনে নিন এই অনুদান আসলে কারা পাবেন। সাধারণত বাংলাদেশ থেকে ব্যাক্তিগত কারণে কোনো ভাবেই আপনার অনুদানের আবেদন মঞ্জুর করা হবে না। তবে ইউরোপ এর দেশ গুলোতে পরিচিত কারো মাধ্যমে সেটা আপনি করতে পারেন।
আর আপনার যদি দেশে কোনো সংস্থ্যা থাকে যারা গরিব মানুষ কে সাহায্য করে বা অসুস্থ মানুষদের চিকিতসা করাতে সাহায্য করে এরকম সংস্থ্যা গুলোর ক্ষেত্রে অনুদান পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। তবে অনুদান পাওয়ার জন্য আপনার সংস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরতে হবে। আপনার সংস্থার করা পূর্বের সকল কাজ গুলো সম্পর্কে অবগত করতে পারলে অনুদান পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।
বিদেশি অনুদান পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
বিদেশি অনুদান এর জন্য আবেদন করার পূর্বেই আপনাকে কাগজ পত্র গুলো একত্র করতে হবে। কারণ আবেদন এর সাথে আপনাকে কাগজ পত্র গুলো কে সাবমিট করতে হবে। আবেদন এর ক্ষেত্রে যেসব কাগজ পত্র লাগবে সেগুলো হলো –
- আপনার সংস্থার লাইসেন্স বা অনুমোদন পত্র।
- আপনার সংস্থার ই-মেইল এড্রেস।
- আপনার সংস্থার পরিচয় ( আপনার সংস্থা কি কাজ করে, আপনার সংস্থা থেকে মানুষ কি পেয়েছে, আপনারা ভবিষ্যতে কি করতে চাচ্ছেন) ইত্যাদি বিষয় গুলো বিভিন্ন নিউজ পোর্টাল ও সংস্থার ওয়েবসাইটের লিংক গুলো দিতে হবে।
- সংস্থার কিছু কাজ করার ভিডিও চিত্র বা ইমেজ।
- যিনি আবেদন করতে পারবেন উক্ত ব্যাক্তি সংস্থার কোন পজিসনে কাজ করছে। তার কাজ ও পূর্বের ৩ মাসের মধ্যে কোনো মিটিং এর ছবি দিতে হবে।
- যিনি আবেদন করবেন উনার বায়ো ডাটা।
- সংস্থার বিজনেস কার্ডের কপি।
- আবেদন কারীর স্বাক্ষর সহ সংস্থার ব্যাংক স্টেটমেন্টের ছবি।
উপরের সকল কাগজ গুলো যখন জোগার হবে তখন আপনাকে প্রতিটি স্টেটনেন্ট সঠিক ভাবে দিয়ে আবেদন করতে হবে।
বিদেশি অনুদান আবেদনের প্রক্রিয়া
বিদেশি অনুদান পেতে আবেদন করতে কি কি লাগবে সেটা সম্পর্কে ইতিমধ্যে জেনেছেন। এখন আবেদন কিভাবে করবেন আর অনুদানের টাকা কিভাবে পাবেন সে সম্পর্কে জানা যাক –
- প্রথমে আপনাকে যে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনুদানের আবেদন করবেন সেই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। ( ইতিমধ্যেই আমরা উপরে কয়েকটি ওয়েবসাইটের তালিকা দিয়েছি)।
- ওয়েবসাইটে ঢোকার পরে সেখানে রেজিস্ট্রেসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। রেজিস্ট্রেসন এর জন্য আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র, ই-মেইল, ছবি ও ফোন নাম্বার এর প্রয়োজন হবে।
- এবার আপনাকে আপনার রেজিস্ট্রেসন নাম্বার অথবা ইমেইল এর মাধ্যমে ভ্যারিফাই করে নিতে হবে।
- এখন আপনি কোন ধরণের অনুদান পেতে চান সেখান থেকে ধরণ সিলেক্ট করে নিতে হবে। সাথে প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সাবমিট করে দিতে হবে।
- আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেলে আপনার অনুদান পাওয়ার আবেদন ওয়েবসাইটে দেখানো হবে। সেখান থেকে যদি কোনো ডোনার অনুদান পাঠাতে চায় তাহলে বাংলাদেশ পররাষ্ট্রমন্ত্রালয় অনুদানের টাকা পাঠিয়ে দেবে। সেখান থেকে বাংলাদেশ সরকার আপনার প্রতিষ্ঠানে অনুদানের টাকা পৌছে দিবে।
আবেদন এর ডকুমেন্টস দেয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন প্রতিটি তথ্য সঠিক হয়। কোনো ভুল তথ্য থাকলে আপনি কোনো ভাবেই অনুদান পাওয়ার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না।
বিদেশি সাহায্য সংস্থ্যা
প্রতি বছর বাংলাদেশে বিদেশের অনেক সংস্থা সাহায্য করে থাকে। বাংলাদেশ সরকার এসব সাহায্যের অর্থ মানুষ কে অনুদান প্রদান করে। বাংলাদেশের সরকারি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এ সকল অনুদান এর বিস্তারিত জেনে নিতে পারবেন। পাশাপাশি কারা এসকল অনুদান পাচ্ছে সে সম্পর্কে ও জানতে পারবেন। ওয়েবসাইটের লিংক – এখানে।
আমেরিকার অনুদান
আমেরিকা প্রতিবছর শিক্ষার্থীদের জন্য অনুদান দিয়ে থাকে। আপনি যদি আমেরিকার কোনো অনুদান এর জন্য আবেদন করতে চান তাহলে আপনাকে এই ওয়েবসাইটে যেতে হবে – https://leakeyfoundation.org/grants/research-grants/
এখানে আপনি শিক্ষা ক্ষেত্রে অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারবেন। ওয়েবসাইটে ভিজিট করার পর আপনি আবেদন এর জন্য নিয়ম এর অপশন পেয়ে যাবেন। সেখান থেকে আপনাকে আবেদন এর সকল নিয়ম গুলো পড়ে নিতে হবে। যদি আপনি অনুদান পাওয়ার যোগ্য মনে করেন তাহলেই সেখান থেকে আবেদন করতে পারবেন।
আবেদন এর সাথে আপনাকে সকল তথ্য ও একাডেমিক বর্ননা দিতে হবে। আবেদন এর সত্যতা প্রমান স্বরুপ আপনাকে পিডিএফ করে ডকুমেন্টস আপলোড করে দিতে হবে।
📌 আরো পড়ুন 👇
উল্লেখ্য – এই সংস্থা টি শুধু মাত্র অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন গ্রহণ করে। তাই এখান থেকে অনুদান পেতে চাইলে আপনাকে শুধু মাত্র অনলাইনের মাধ্যেমেই আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
বিদেশি অনুদান সম্পর্কে আমাদের মতামত
বিদেশি অনুদান কিভাবে পাব – আর্টিকেলে বলা উপায় গুলোর মাধ্যমে আপনি বিদেশি অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে আপনি কখনোই মিথ্যা তথ্য দিয়ে আবেদন করলে অনুদান পাবেন না। শুধু মাত্র অনুদান যাদের প্রয়োজন তাদের কেই বিদেশ থেকে অনুদান প্রদান ক্রয়া হয়।
আমাদের স্বভাবের কারণে প্রায় সব দেশ থেকেই ব্যাক্তিগত কারনে আবেদন নেয়া বাংলাদেশ থেকে বন্ধ করে দিয়েছে। তাই বিনা প্রয়োজনে কারণ ছাড়াই মিথ্যা তথ্য দিয়ে আবেদন করবেন না, আর্টিকেল টি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।