প্রযুক্তির উন্নয়ন কিভাবে হয়েছে? (৩টি ধাপ)

পোষ্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

5/5 - (1 vote)

মানুষের প্রয়োজনে, মানবসভ্যতার উন্নতি করার জন্য, যেকোনো কাজ দ্রুত করার জন্য প্রযুক্তির উন্নয়ন হয়েছে। প্রযুক্তির উন্নয়ন কিভাবে হয়েছে তা নিয়ে এই পোস্টে আপনাদের সাথে আরও বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করবো। পোস্টটি শুরু থেকে শেষ অব্দি পড়লে প্রযুক্তির উন্নয়ন কিভাবে হয়েছে, মানুষ কেন প্রযুক্তির উন্নয়ন করেছে এবং প্রযুক্তির উন্নয়ন সম্পর্কে আরও অনেক তথ্য জানতে পারবেন।

একজন মানুষ এখন প্রতিনিয়ত প্রযুক্তি ব্যবহার করে দিনাতিপাত করছে। সকালে ঘুম থেকে উঠার জন্য অ্যালার্ম ঘড়ি বা মোবাইলে অ্যালার্ম ব্যবহার করা হয়, যা প্রযুক্তির উন্নয়নে মানুষ আবিষ্কার করতে পেরেছে। অসুস্থ হলে চিকিৎসা করার জন্য, কারও সাথে দ্রুত যোগাযোগ করার জন্য, এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় দ্রুত যাতায়াত করার জন্য মানুষ প্রতিনিয়ত প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।

প্রযুক্তি ব্যবহার করার কারণে এখন মানুষ প্রায় সকল কাজ অনেক দ্রুত সম্পন্ন করতে পারছে। পূর্বে যে কাজ করতে কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত সময় লাগতো, তা এখন নিমিষেই করা সম্ভব হচ্ছে। সবকিছু হচ্ছে মানুষ প্রযুক্তির উন্নয়ন করার কারণে। প্রযুক্তির উন্নয়ন কিন্তু থেমে নেই। মানুষের চাহিদা দিনদিন বেড়েই চলেছে। এই চাহিদা পূরণ করার লক্ষে অসংখ্য বিজ্ঞানী এবং প্রযুক্তিবিদরা কাজ করছে এবং নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করছে।

মানুষের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে প্রযুক্তির উন্নয়ন হয়েছে এবং হচ্ছে। ভবিষ্যতে আমরা আরও উন্নত অনেক প্রযুক্তির সাথে পরিচিত হবো, যা এখন কল্পনাও করতে পারছি না। তো চলুন, প্রযুক্তির উন্নয়ন কিভাবে হয়েছে তা নিয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য জেনে নেয়া যাক।

প্রযুক্তির উন্নয়ন কিভাবে হয়েছে

প্রযুক্তির উন্নয়ন কিভাবে হয়েছে

মানুষের প্রয়োজনে, সময় বাঁচাতে এবং অনেক কষ্টসাধ্য কাজ সহজেই করার জন্য প্রযুক্তির উন্নয়ন হয়েছে। প্রযুক্তির উন্নয়ন একটি দীর্ঘ ও জটিল প্রক্রিয়া, যা মানব সভ্যতার শুরু থেকেই চলে আসছে। প্রয়োজনীয়তা, কৌতূহল, এবং জ্ঞানের প্রসার প্রযুক্তির এই উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে। প্রযুক্তির উন্নয়ন হয়েছে কয়েকটি ধাপে। এগুলো হচ্ছে প্রাচীনকাল, মধ্যযুগ এবং আধুনিক যুগ। এই তিন ধাপে প্রযুক্তি একদম শুরু থেকে মানুষের প্রয়োজন মেটাতে মেটাতে এখন আধুনিক যুগের প্রযুক্তিতে পরিণত হয়েছে।

📌 আরো পড়ুন 👇

গুহায় থাকা মানুষ যখন আগুন জ্বালাতে শিখে, তারপর তারা আরও অনেক কিছুই আবিষ্কার করে যা মানুষকে প্রাচীনকালের গুহাবাসী থেকে আধুনিক যুগের সভ্য মানুষ জাতিতে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছে। প্রযুক্তির উন্নয়ন কিভাবে হয়েছে তা উপরোক্ত তিনটি ধাপে নিচে উল্লেখ করে দিয়েছি।

যথা –

  • প্রাচীনকালে প্রযুক্তির উদ্ভাবন
  • মধ্যযুগে প্রযুক্তির উন্নয়ন
  • আধুনিক যুগে প্রযুক্তির উন্নয়ন

চলুন, আরও বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।

প্রাচীনকালে প্রযুক্তি উদ্ভাবন

প্রাচীনকালে প্রযুক্তির উদ্ভাবন শুরু হয়েছে আগুনের ব্যবহারের মাধ্যমে। মাংস সহ বিভিন্ন খাবার কাঁচা খাওয়ার সমস্যা থেকে বাঁচতে, বিভিন্ন হিংস্র প্রাণী থেকে বেঁচে থাকতে মানুষ আগুন আবিষ্কার করে। যা মানবসভ্যতার সবথেকে গুরুত্বপুর্ণ আবিষ্কার হিসেবে এখন পর্যন্ত ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এছাড়াও, পাথরের হাতিয়ার আবিষ্কার করেছিলো মানুষ প্রাচীনকালে।

যা বিভিন্ন বন্য প্রাণী শিকার করার কাজে, হিংস্র প্রাণী থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে ব্যবহার করা হতো। এর ধীরে ধীরে এই পাথরের হাতিয়ার থেকে মানুষ এখন অনেক উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছে যা দিয়ে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা যায়। তবে, এসব প্রযুক্তির উন্নয়ন প্রাচীনকালে হয়নি। প্রাচীনকালে এসব প্রযুক্তির উদ্ভাবন হয়েছে, পরবর্তীতে ধীরে ধীরে তা বিবর্তিত হয়ে আধুনিক প্রযুক্তিতে রূপান্তর হয়েছে।

এছাড়াও, শুধুমাত্র গাছে থাকা ফল, বিভিন্ন পশু-পাখি শিকার করে নিজেদের ক্ষুদা সংবরণ করা সম্ভব হচ্ছিলো না জন্য প্রাচীনকালে মানুষ কৃষিকাজ আবিষ্কার করে। ফলে, নিজেরা চাষাবাদ করে বিভিন্ন ফল, শাক-সবজি ফলিয়ে তা দিয়ে সবার চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয়েছে। কৃষি কাজ আবিষ্কার হয়েছে প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণেই। এখন প্রযুক্তির উন্নয়ন হওয়ার কারণে কৃষি কাজে আরও অনেক আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।

প্রাচীনকালে প্রযুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার হচ্ছে চাকা। গোল চাকা আবিষ্কার করার পর যাতায়াত করার জন্য, বিভিন্ন মাল বহন করার জন্য মানুষ যানবাহন তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। চাকা আবিষ্কার করার কারণেই এখন যানবাহন এর এত উন্নতি সম্ভব হয়েছে। যানবাহনের উন্নতি হওয়ার কারণেই এখন মানুষ স্থলপথ, জলপথ এবং আকাশপথে যাতায়াত করতে পারছে।

এছাড়াও, বিভিন্ন হিসাব করার জন্য লেখালেখি করার পদ্ধতিও আবিষ্কার হয়েছে প্রাচীনকালে। গুহার দেয়ালে দাগ কেটে যেকোনো হিসাব রাখার মাধ্যমেই লেখালেখি আবিষ্কার হয়েছে।

মধ্যযুগে প্রযুক্তির উন্নয়ন

মধ্যযুগে প্রযুক্তির উন্নয়ন হয়েছে এবং নতুন নতুন অনেক প্রযুক্তির উদ্ভাবন হয়েছে যা মানবসভ্যতার কল্যাণস্বরূপ কাজ করছে। মধ্যযুগে জলবিদ্যুৎ এবং বায়ুবিদ্যুতের আবিষ্কার হয়েছে। যা দিয়ে মানুষ এখনো উপকৃত হয়ে আসছে। প্রযুক্তির ব্যবহারে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে এখন অধিকাংশ যানবাহন, ডিভাইস, মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রযুক্তির উন্নতির একটি নিদর্শন হচ্ছে বিদ্যুৎ। বিদ্যুৎ ছাড়া একটি মুহূর্ত এখন মানুষ থাকতে পারে না। পুরো পৃথিবীর কার্যব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ে বিদ্যুৎ না থাকলে।

এই বিদ্যুৎ আবিষ্কার এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন করার জন্যই মধ্যযুগে জলবিদ্যুৎ এবং বায়ুবিদ্যুৎ আবিস্কার হয়েছে। জলবিদ্যুৎ এর একটি উদাহরণ হচ্ছে আমাদের দেশের কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এছাড়াও, বায়ু বিদ্যুতের একটি উদাহরণ হচ্ছে টারবাইন। টারবাইন ব্যবহার করে বাতাসের গতি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। পানির স্রোত ব্যবহার করে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে।

মধ্যযুগে প্রযুক্তির এসব উন্নয়ন ছাড়াও ছাপাখানার উদ্ভাবন হয়েছে। ছাপাখানা ব্যবহার করে যেকোনো কাগজ/নথির নকল তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে। আসল ডকুমেন্ট ব্যবহার না করেও এখন আসলের মতোই ডকুমেন্ট তৈরি করা যাচ্ছে যা অনেক কার্যকরী একটি আবিষ্কার। অফিস-আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রেই ছাপাখানার ব্যবহার এখন দিনদিন বেড়েই চলেছে।

প্রতিটি কাজেই ছাপাখানা ব্যবহার হয়ে আসছে। এছাড়াও, মধ্যযুগে আরও অনেক প্রযুক্তি আবিষ্কার হয়েছে। এগুলোর মাঝে রয়েছে – বারুদের আবিষ্কার, জ্যোতির্বিদ্যা, নৌবিদ্যা ইত্যাদি। বারুদ ব্যবহার করে আগুন জ্বালানো সহ বিভিন্ন অস্ত্র চালানো হয়ে থাকে। বারুদও একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার যা প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে আবিষ্কার এবং উন্নীত হয়েছে।

আধুনিক যুগে প্রযুক্তির উন্নয়ন

আধুনিক যুগে শিল্প বিপ্লব, আধুনিক প্রযুক্তি আবিষ্কার ও পূর্বে আবিষ্কার হওয়া প্রায় সকল প্রযুক্তির উন্নয়ন হয়েছে। এছাড়াও, প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কার হচ্ছে এবং পূর্বের সকল প্রযুক্তি আরও উন্নত হচ্ছে। মানুষের প্রয়োজনীয়তা এবং চাহিদা বৃদ্ধির কারণে নতুন নতুন সকল প্রযুক্তি উদ্ভাবন হচ্ছে। নিচে আধুনিক প্রযুক্তি আবিষ্কার সহ, প্রযুক্তির উন্নয়ন কিভাবে হয়েছে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।

বাষ্পীয় ইঞ্জিন আবিষ্কার ছিল প্রযুক্তির ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা। উনিশ শতকের শুরুতে এই আবিষ্কার শিল্প বিপ্লবের সূচনা করে, যা মানব সভ্যতাকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছিল। বাষ্পীয় ইঞ্জিনের আবিষ্কারের পূর্বে, মানুষ কাজ করার জন্য পেশীশক্তি, জলবিদ্যুৎ, এবং বায়ুশক্তির উপর নির্ভরশীল ছিল। বাষ্পীয় ইঞ্জিন প্রথমবারের জন্য মানুষকে প্রচুর পরিমাণে শক্তি উৎপাদনের একটি নির্ভরযোগ্য এবং নিয়ন্ত্রণযোগ্য উপায় প্রদান করে। আধুনিক যুগের সবথেকে যুগান্তকারী উদ্ভাবন হচ্ছে এই বাষ্পীয় ইঞ্জিন।

টেলিযোগাযোগ আবিষ্কার প্রযুক্তির ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা। দূর থেকে তথ্য আদান-প্রদানের এই মাধ্যম মানব সভ্যতাকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে। টেলিযোগাযোগের আবিষ্কারের পূর্বে, মানুষ দূরের মানুষের সাথে যোগাযোগ করার জন্য চিঠি, বার্তাবাহক, বা ধোঁয়া সংকেতের মতো ব্যবস্থা ব্যবহার করত। এই ব্যবস্থাগুলি ছিল ধীর, অবিশ্বস্ত এবং সীমিত পরিসরের। আধুনিক প্রযুক্তি আবিষ্কার এবং প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে এসব প্রযুক্তি ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে।

প্রযুক্তির উন্নয়নের প্রভাব

প্রযুক্তির উন্নয়নের প্রভাব প্রায় সকল ক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে সমগ্র বিশ্বের উন্নয়ন ঘটেছে। নিম্নে প্রযুক্তির উন্নয়নের প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো –

১। চিকিৎসা বিজ্ঞানে অগ্রগতি

চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতি প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। প্রযুক্তির অগ্রগতি চিকিৎসা বিজ্ঞানকে নতুন নতুন উদ্ভাবন ও আবিষ্কারের মাধ্যমে সমৃদ্ধ করে তুলছে। এর ফলে মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বিভিন্ন জটিল রোগের চিকিৎসা সম্ভব হয়েছে।

📌 আরো পড়ুন 👇

প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। এমন কিছু উদাহরণ নিচে উল্লেখ করে দিয়েছি –

  • রোগ নির্ণয়: প্রযুক্তির সাহায্যে রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে অনেক উন্নতি হয়েছে। এমআরআই, সিটি স্ক্যান, এক্স-রে, এবং আল্ট্রাসাউন্ডের মতো উন্নত ইমেজিং প্রযুক্তি চিকিৎসকদের রোগের সঠিক ও দ্রুত নির্ণয় করতে সাহায্য করে।
  • চিকিৎসা: প্রযুক্তির সাহায্যে নতুন নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি উদ্ভাবিত হচ্ছে। রোবটিক সার্জারি, লেজার থেরাপি, এবং জিন থেরাপির মতো উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি জটিল রোগের চিকিৎসায় কার্যকর ভূমিকা পালন করছে।
  • ওষুধ: প্রযুক্তির সাহায্যে নতুন নতুন ওষুধ আবিষ্কার করা হচ্ছে। জিন থেরাপি, টার্গেটেড থেরাপি, এবং ইমিউনথেরাপির মতো উন্নত ওষুধ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় কার্যকর ভূমিকা পালন করছে।
  • প্রতিরোধ: প্রযুক্তির সাহায্যে নতুন নতুন টিকা আবিষ্কার করা হচ্ছে। ফলে, বিভিন্ন সংক্রামক রোগের প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে।
  • তথ্য প্রযুক্তি: তথ্য প্রযুক্তির বিকাশ চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। টেলিমেডিসিন, ই-হেলথ, এবং মোবাইল হেলথ অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে মানুষ সহজেই চিকিৎসা সেবা পেতে পারছে।

প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতি মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সাহায্য করেছে। ভবিষ্যতেও প্রযুক্তির অগ্রগতি চিকিৎসা বিজ্ঞানকে আরও উন্নত করে তুলবে বলে আশা করা যায়। প্রযুক্তির উন্নয়ন কিভাবে হয়েছে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন।

২। কম্পিউটার ও ইন্টারনেট আবিষ্কার

প্রযুক্তির উন্নয়ন কিভাবে হয়েছে

প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট এর আবিষ্কার হয়েছে। যা ব্যবহার করে এখন মানুষ যেকোনো কাজ অনেক সহজেই এবং ঘরে বসেই সম্পন্ন করতে পারছে। কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করে মহাকাশ অভিযান সহ আরও অনেক কাজ করা সম্ভব হচ্ছে। এছাড়াও, যোগাযোগ করার জন্যও ইন্টারনেট অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

ঘরে বসে অফিসের কাজ করা, যেকোনো বিষয় সম্পর্কে জানা এবং শেখা কিংবা অনলাইনে ক্লাস করার কাজেও ইন্টারনেট ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণেই এসবকিছু সম্ভব হয়েছে। কম্পিউটার যেমন মানবসভ্যতার উন্নতির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক তেমনি ইন্টারনেটও মানবসভ্যতার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি আবিষ্কার। এই দুইটি মিলে মানবজাতির অন্য সময়সাপেক্ষ কাজ সহজেই সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করছে।

কম্পিউটার আবিষ্কার হওয়ার পর থেকে প্রতিনিয়ত উন্নত হয়েই চলেছে। এখন, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ অটোমেটিক করার জন্য কম্পিউটার ব্যবহার করা হচ্ছে। মহাকাশ অভিযান, রোবট তৈরি সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করা হচ্ছে। যা প্রযুক্তির উন্নয়ন না হলে করা সম্ভব ছিলো না। প্রযুক্তির উন্নয়ন কিভাবে হয়েছে তা কম্পিউটার আবিষ্কার থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত কম্পিউটারের উন্নতি দেখলেই বুঝতে পারবেন।

৩। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আবিষ্কার

প্রযুক্তির উন্নতির আধুনিক যুগে মানুষ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছে যা মানুষের মতো করেই ভাবতে সক্ষম এবং অনেক কাজ মানুষের মতো করেই করতে পারে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) প্রযুক্তির উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার। দীর্ঘদিন ধরে বিজ্ঞানীরা মানুষের বুদ্ধিমত্তার অনুকরণ করার চেষ্টা করে আসছেন এবং প্রযুক্তির অগ্রগতি এই চেষ্টাকে বাস্তবায়নে সাহায্য করেছে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হলো মেশিনের বুদ্ধিমত্তা, যা মানুষের চিন্তাভাবনা, শেখা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাকে অনুকরণ করে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিজেই বিভিন্ন বিষয় শিখতে পারে, ফলে তাদের মাঝে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা তৈরি হচ্ছে। এর ফলে এখন এআই বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স জাকে আমরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলেই জানি, তা ব্যবহার করে অনেক কাজ সহজেই করে নেয়া সম্ভব হচ্ছে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার একটি বাস্তব উদাহরণ হচ্ছে চ্যাটজিপিটি। এটি একটি এআই রাইটিং টুল বা এআই ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল। চ্যাটজিপিটি সম্পর্কে বলার মতো তেমন কিছু নেই। এটি আবিষ্কার হওয়ার পর থেকে অনেক দ্রুত উন্নয়ন হচ্ছে। এছাড়াও, এই এআইটি নিজে থেকেই অনেক কিছু শিখতে পারে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে বিভিন্ন কোম্পানি রোবট তৈরি করছে। ফলে, এসব রোবট মানুষের মতো করে অনেক কাজ করতে পারে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরি করা এসব রোবট মানুষের জন্য বিপজ্জনক এমন অনেক কাজ করে দিচ্ছে। প্রযুক্তির উন্নয়ন কিভাবে হয়েছে এবং প্রতিনিয়ত প্রযুক্তির উন্নয়ন কেন হচ্ছে তা এসব প্রযুক্তি যেমন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং রোবটিক্স দেখলেই বুঝতে পারবেন।

প্রযুক্তির উন্নয়ন ধাপে ধাপে হয়েছে যা ইতোমধ্যে উল্লেখ করে দিয়েছি। প্রাচীনযুগ, মধ্য যুগ এবং আধুনিক যুগে প্রযুক্তির উন্নয়ন কিভাবে হয়েছে তা উপরোক্ত তথ্যগুলো দেখতে বুঝতে পারবেন। 

প্রযুক্তির উন্নয়ন সম্পর্কে আমাদের মতামত 

আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে প্রযুক্তির উন্নয়ন কিভাবে হয়েছে এবং প্রযুক্তির উন্নয়নের বিভিন্ন ধাপ নিয়ে আলোচনা করেছি। এসব ধাপে প্রযুক্তির কোন কোন জিনিসগুলো আবিষ্কার হয়েছে এবং কোন কোন প্রযুক্তি উন্নত হয়েছে তা জানতে পারবেন।

প্রযুক্তির উন্নয়ন সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন। আমরা দ্রুত উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। এতক্ষন ডিয়ার টেক ব্লগের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।


পোষ্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Comment