সমাজ কাকে বলে? সমাজ কত প্রকার ও কি কি

পোষ্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

5/5 - (1 vote)

সমাজ হলো এমন এক ব্যবস্থা যেখানে একাধিক ব্যক্তি পারস্পরিক সম্পর্কের মাধ্যমে একত্রিত হয়ে বসবাস করে। এই সম্পর্কগুলি বিভিন্ন রীতিনীতি, বিশ্বাস, আইন, রীতিনীতি, ভাষা, এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়।

সমাজ কাকে বলে, সমাজের সংজ্ঞা এবং সমাজের বৈশিষ্ট্য নিয়ে আজকের এই ব্লগে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করবো। তাই, আপনি যদি সমাজ কাকে বলে এবং সমাজ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য না জানেন, তাহলে পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়তে পারেন। এতে কে, সমাজের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কেও বিস্তারিত জানতে পারবেন।

তো চলুন, সমাজ কাকে বলে, সমাজ কত প্রকার ও কি কি এবং সমাজ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেয়া যাক।

সমাজ কাকে বলে

মানুষ কেবল একা বাস করে না, বরং তারা নিজেদের মধ্যে বন্ধন বা সম্পর্ক তৈরি করে, যার ফলে তৈরি হয় “সমাজ”। এটি এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে একাধিক ব্যক্তি একত্রিত হয়ে, নিয়ম-কানুন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে, একসাথে বসবাসের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করে।

এই ব্যবস্থায় ঐক্য, স্থায়িত্ব, নির্ভরশীলতা, সহযোগিতা, সংস্কৃতি এবং নিয়ম-কানুনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলি বিদ্যমান থাকে। ঐক্যের মাধ্যমে সমাজের সদস্যদের মধ্যে বন্ধুত্ব ও সৌহার্দ্য তৈরি হয়। সময়ের সাথে সাথে সমাজব্যবস্থার পরিবর্তন হলেও, সমাজের স্থায়িত্ব বিলীন হয় না। সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক নির্ভরশীলতা এবং সহযোগিতা সমাজকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।

সংস্কৃতি হচ্ছে সমাজের আত্মা, যা ঐতিহ্য, রীতিনীতি, বিশ্বাস এবং মূল্যবোধের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। নিয়ম-কানুন সমাজকে শৃঙ্খলাবদ্ধ রাখে এবং সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে। সমাজের উদ্দেশ্য হলো মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজন পূরণ করা, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সামাজিকীকরণের মাধ্যমে তাদেরকে পরিণত করা, মানসিক প্রশান্তি প্রদান করা এবং সংস্কৃতি ধারণ ও সংরক্ষণ করা। সমাজের বিভিন্ন রূপ হচ্ছে – পরিবার, গ্রাম, শহর এবং রাষ্ট্র।

সমাজ কত প্রকার ও কি কি

মানুষের জীবন একাধারে ব্যক্তিগত ও সামাজিক। ব্যক্তিগত জীবনের পাশাপাশি, মানুষ সামাজিক জীব হিসেবে বিভিন্ন গোষ্ঠী, প্রতিষ্ঠান এবং রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে জীবনযাপন করে। এই বৈচিত্র্যপূর্ণ সামাজিক জীবনের প্রেক্ষাপটে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীবিভাগ দেখা যায়।

আকারের উপর ভিত্তি করে সমাজ কয়েক ধরনের হয়ে থাকে। যেমন – ছোট সমাজ এবং বড় সমাজ। ছোট সমাজের ক্ষেত্রে পরিবার, গ্রাম, বন্ধু-বান্ধব ইত্যাদি রয়েছে। আবার বড় সমাজের ক্ষেত্রে শহর, জাতি, রাষ্ট্র ইত্যাদি রয়েছে। আকারের উপর ভিত্তি করে এই পার্থক্য দেয়া যায়।

সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে সমাজ দুই ধরনের হয়ে থাকে। এগুলো হচ্ছে – আদিবাসী সমাজ এবং আধুনিক সমাজ। আদিবাসী সমাজে ঐতিহ্যবাহী রীতিনীতি ও আচার-অনুষ্ঠান পালন করে থাকে। অপরদিকে, আধুনিক সমাজে প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে চলা হয়।

উদ্দেশ্য অনুসারে সমাজ দুই ধরনের হয়ে থাকে। একটি হচ্ছে ধর্মীয় সমাজ এবং অপরটি হচ্ছে রাজনৈতিক সমাজ। ধর্মীয় বিশ্বাস ও নীতির ভিত্তিতে গঠিত সমাজকে ধর্মীয় সমাজ বলে এবং রাজনৈতিক আদর্শের ভিত্তিতে গঠিত সমাজকে রাজনৈতিক সমাজ বলা হয়।

এছাড়াও, সমাজকে আরও কয়েকভাগে ভাগ করা যায়। উদ্দেশ্যে এবং বিভিন্ন কারণে সমাজে প্রকারভেদ দেখা যায়।

সমাজের বৈশিষ্ট্য কি কি

সমাজ ব্যবস্থা অনেক জটিল একটি বিষয়। এখানে একের অধিক মানুষ একত্রে বসবাস করে। তাই, সমাজের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান রয়েছে। সমাজের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য কি কি তা নিচে উল্লেখ করে দিলাম।

১. ঐক্য

ঐক্য হচ্ছে সমাজের মূল ভিত্তি। আচার-অনুষ্ঠান, রীতিনীতি, মনোভাব, চাওয়া-পাওয়া ও আদর্শগত ঐক্যের ভিত্তিতে একটি সমাজ গড়ে ওঠে। ঐক্য না থাকলে একটি সমাজ টিকে থাকতে পারেনা।

২. স্থায়িত্ব

সমাজ হচ্ছে একটি স্থায়ী ব্যবস্থা। সময়ের সাথে সাথে সমাজের বিভিন্ন রীতি-নীতি পরিবর্তন হলেও, সমাজের মূল কাঠামো টিকে থাকে।

৩. নির্ভরশীলতা

সমাজের সদস্যরা একে অপরের উপর নির্ভরশীল। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপত্তা ইত্যাদি প্রয়োজন পূরণের জন্য এরা একে অপরের সাহায্যের উপর নির্ভর করে। বিনা পারিশ্রমিকে অথবা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ একে অপরকে সহযোগিতা করে থাকে।

৪. সহযোগিতা

সমাজের সদস্যরা একে অপরকে বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করতে, সমস্যা সমাধানে, উন্নয়নে সহযোগিতা করে থাকে।

৫. সংস্কৃতি

প্রতিটি সমাজের নিজস্ব সংস্কৃতি থাকে। ঐতিহ্য, রীতিনীতি, বিশ্বাস, মূল্যবোধ, ভাষা, সাহিত্য, শিল্পকলা ইত্যাদির মাধ্যমে প্রতিটি সমাজের সংস্কৃতি প্রকাশ পায়।

৬. নিয়ম-কানুন

সমাজের নিজস্ব নিয়ম-কানুন থাকে। আইন, রীতিনীতি, নীতিমালা ইত্যাদির মাধ্যমে সমাজের সদস্যদের আচরণবিধি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। নিয়ম-কানুন না থাকলে যেকোনো সমাজব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে।

৭. পরিবর্তনশীলতা

সমাজ স্থির নয়, বরং পরিবর্তনশীল। সময়ের সাথে সাথে চিন্তা-ভাবনা, প্রযুক্তি, জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে সমাজের পরিবর্তন ঘটে।

৮. বৈচিত্র্য

সমাজে বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণ, জাতি, ভাষা, সংস্কৃতির মানুষ বাস করে। এই বৈচিত্র্য সমাজকে আরও সমৃদ্ধ করে তোলে। সমাজে ঐক্য থাকার কারণে বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণ, জাতির মানুষ একত্রে বসবাস করতে পারে।

সমাজের গুরুত্ব

সমাজ আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ব্যক্তিগত বিকাশ, সুরক্ষা, ন্যায়বিচার, ঐতিহ্য, এবং পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে সমাজের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই আমাদের সকলের উচিত সমাজের উন্নয়ন করা এবং দায়িত্বশীল হওয়া। সমাজকে কেন এত গুরুত্বপূর্ণ বলা হয় তা নিম্নে দেওয়া হলো:

  • সমাজ আমাদের বস্তুগত ও মানসিক চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করে।
  • সমাজ ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব গঠনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 
  • সমাজের মাধ্যমে আমাদের সংস্কৃতির বিকাশ ঘটে।
  • সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সমাজ অপরিহার্য। 
  • সমাজ মানুষকে সামাজিক নিয়ম-কানুন এবং মূল্যবোধ শিখতে সাহায্য করে।

এ সকল কারণে সমাজকে গুরুত্বপূর্ণ বলা হয়। 

সমাজ গঠনের মূল উদ্দেশ্য কি 

মানুষ কেবল একা বাস করে না, বরং তারা নিজেদের মধ্যে বন্ধন তৈরি করে, যার ফলে তৈরি হয় “সমাজ”। এই ব্যবস্থা গঠনের পেছনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য লুকিয়ে আছে। নিম্নে সমাজ গঠনের মূল উদ্দেশ্যগুলো উল্লেখ করে দেয়া হল —

প্রয়োজন পূরণ

সমাজের প্রধান উদ্দেশ্য হলো মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজন পূরণ করা। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, বিনোদন ইত্যাদি মৌলিক চাহিদা সমাজের মাধ্যমেই পূরণ করা হয়। সমাজের এক শ্রেণির মানুষ খাদ্য উৎপাদন করে, অপর শ্রেণির মানুষ বস্ত্র তৈরি করে। এভাবে করে কেউ শিক্ষাদানে নিয়জিত এবং কেউ স্বাস্থ্যসেবা দিতে। এভাবে করেই সমাজের মানুষ একে অপরের প্রয়োজন পূরণ করে থাকে।

নিরাপত্তা প্রদান

সমাজ সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। আইন-কানুন, নিয়ম-নীতি, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা ইত্যাদির মাধ্যমে সমাজের সদস্যরা নিরাপদে বসবাস করতে পারে।

সামাজিকীকরণ

সমাজ একজন ব্যক্তিকে পরিবার, বন্ধু, স্কুল, কর্মক্ষেত্র, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ইত্যাদির মাধ্যমে সমাজের নিয়ম-কানুন, রীতিনীতি, মূল্যবোধ শেখায় এবং একজন সু-নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে।

মানসিক প্রশান্তি

সমাজের কারণে একজন ব্যক্তি পরিবার, বন্ধুবান্ধব, প্রিয়জনদের সান্নিধ্য, সামাজিক বন্ধন, সহানুভূতি ইত্যাদি পায় যা তাকে মানসিক প্রশান্তি দিয়ে থাকে। সুন্দরভাবে বেঁচে থাকতে একজন মানুষের মানসিক শান্তি অপরিহার্য।

সংস্কৃতি ধারণ

সমাজ সংস্কৃতি ধারণ করে। ঐতিহ্য, রীতিনীতি, বিশ্বাস, মূল্যবোধ, ভাষা, সাহিত্য, শিল্পকলা ইত্যাদির মাধ্যমে সমাজের সংস্কৃতি প্রকাশ পায়।

সহযোগিতা ও সহমর্মিতা

সমাজে সহযোগিতা ও সহমর্মিতা বিদ্যমান। একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া, সাহায্য করা, বিপদে এগিয়ে আসা, সমাজের উন্নয়নে অবদান রাখা – এগুলি সমাজের মূল্যবোধ। সহযোগিতা এবং সহমর্মিতার কারণে একটি সমাজের মানুষেরা সুন্দরভাবে জীবনযাপন করতে পারে।

সামাজিক ন্যায়বিচার

সমাজে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। সকল সদস্যের সমান অধিকার ও সুযোগ নিশ্চিত করা, বৈষম্য দূর করা, সকলের জন্য ন্যায়বিচার প্রদান করা সমাজের দায়িত্ব।

আমাদের এই পৃথিবীতে বিভিন্ন রকমের সমাজব্যবস্থা বিদ্যমান রয়েছে। সমাজের সকলেই এসব নিয়ম-কানুন মেনে চলেন। একটি সমাজের বৈশিষ্ট্য কি কি তা এখানে উল্লেখ করে দিয়েছি। সমাজভেদে বৈশিষ্ট্যগুলোর মাঝে পার্থক্য হয়ে থাকে।

সমাজের বৈশিষ্ট্য নয় কোনগুলো

একটি সমাজের যেমন বিভিন্ন রকমের বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ঠিক তেমনি সমাজের বৈশিষ্ট্য নয়, সমাজে কাম্য নয় এমন কিছু বিষয় রয়েছে। এই ধরনের কিছু বিষয় নিচে উল্লেখ করে দেয়া হলো —

  • একাকীত্ব: সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো সমাজের মানুষদের মধ্যে ঐক্য ও সহযোগিতা থাকা। একে অপরের বিপদে এগিয়ে আসা, বিভিন্ন প্রয়োজনে সহযোগিতা করা এগুলো হচ্ছে সমাজের বৈশিষ্ট্য। কিন্তু, একাকীত্ব সমাজের বৈশিষ্ট্য নয়।
  • স্বনির্ভরতা: সমাজের প্রতিটি মানুষ একে অপরের উপর নির্ভরশীল। সমাজের একটি শ্রেণির মানুষ কৃষি কাজ করে, একটি শ্রেণির মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য করে, আবার কেউ শিক্ষাদান করে, একটি শ্রেণির মানুষ চিকিৎসা প্রদান করে। এভাবে করে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ একে অপরের উপর নির্ভরশীল। সম্পূর্ণ স্বনির্ভরতা সমাজের বৈশিষ্ট্য নয়।
  • অনিয়ন্ত্রণ: সমাজের মানুষদের আচরণ নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন রকমের নিয়ম-কানুন, রীতিনীতি, আইন ইত্যাদি প্রয়োগ করা হয়। কেউ যদি সমাজের যেকোনো নিয়ম না মানে, কোনো অপরাধমূলক কাজ করে, তাহলে তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হয়। অনিয়ন্ত্রণ সমাজের বৈশিষ্ট্য নয়।

এগুলো ছাড়াও আরও কিছু বিষয় আছে যা সমাজের বৈশিষ্ট্য নয় এবং এগুলো করা কোনো সমাজেই কাম্য নয়। সমাজে থাকতে হলে, সমাজের নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে।

সমাজের উপাদান কি কি

প্রতিটি সমাজ কিছু উপাদান নিয়ে তৈরি হয়ে থাকে। সমাজের অনেকগুলো উপাদান রয়েছে। সমাজের উপাদান কি কি তা নিচে উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে। চলুন, জেনে নেয়া যাক।

১. মানুষ

সমাজের মূল উপাদান হলো মানুষ। বিভিন্ন ধরণের মানুষ, তাদের চিন্তা-ভাবনা, আচার-আচরণ, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ইত্যাদি নিয়েই একটি সমাজ গঠিত হয়। মানুষ ছাড়া কোনো সমাজ গঠিত হয়না।

২. সামাজিক গোত্র

পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কর্মক্ষেত্র, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি সামাজিক উপাদান। মানুষ এবং সমাজের এই উপাদানগুলো নিয়ে একটি সমাজ গঠিত হয়। শুধু মানুষ ছাড়া সমাজ গঠন করা যাবেনা। তাই, সমাজে মানুষ এবং সামাজিক্ল গোত্রের এসবকিছু লাগবে।

৩. সামাজিক প্রতিষ্ঠান

বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান, যেমন: পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্র ইত্যাদি সমাজের উপাদান। এই উপাদানগুলো সমাজ ব্যবস্থা গড়তে এবং পরবর্তীতে তা উন্নত করতে সহযোগিতা করে থাকে।

উপরে উল্লেখ করে দেয়া উপাদানগুলো ছাড়াও, সমাজের সংস্কৃতি, পারস্পরিক নির্ভরতা, নিয়ম-কানুন ইত্যাদি হচ্ছে সমাজের উপাদান। সকল উপাদান নিয়েই একটি সমাজ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। সমাজ কাঠামোর প্রতিটি উপাদান আমাদের জন্য জরুরি।

সমাজের ৫টি উপাদান কি কি

সমাজের ৫টি উপাদান হচ্ছে মানুষ, পরিবার, রাষ্ট্র বা সরকার, শিক্ষা এবং ধর্ম। এই ৫টি উপাদান ছাড়াও একটি সমাজে আরও অনেক উপাদান রয়েছে যা নিয়ে সমাজ গড়ে উঠে। সমাজের বিভিন্ন উপাদানগুলো মিলে একটি সমাজ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হলে সমাজের প্রতিটি উপাদানের মাঝে সমন্বয় ঘটাতে হবে। যেমন, মানুষ এবং পরিবার একে অপরের পরিপূরক। পরিবার ছাড়া একটি মানুষ সহজ জীবনযাপন করতে পারে না।

📌 আরো পড়ুন 👇

আবার, রাষ্ট্র ছাড়া মানুষ এবং পরিবার থাকতে পারে না। আমাদের জীবনে এই উপাদানগুলোর গুরুত্ব অনেক। এছাড়াও, সমাজের মানুষদের জন্য শিক্ষা এবং ধর্মীয় বিশ্বাস অনেক গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার অভাবে মানুষ সামাজিক জীব থেকে অসামাজিক হয়ে পড়ে, বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ে। আবার, ধর্মীয় বিশ্বাস না থাকলে মানুষ ইহকাল এবং পরকালে শান্তি পাবেনা। তাই, সমাজের বিভিন্ন উপাদানগুলোর সমন্বয় ঘটাতে হবে।

এই ৫টি উপাদান ছাড়াও সমাজের আরও অনেক উপাদান রয়েছে। যেমন – ঐতিহ্য, রীতিনীতি, বিশ্বাস, মূল্যবোধ, ভাষা, সাহিত্য, শিল্পকলা ইত্যাদির মাধ্যমে সমাজের সংস্কৃতি প্রকাশ পায়। সমাজ না থাকলে এসব সংস্কৃতি বিলুপ্ত হয়ে যাবে। আবার, সমাজ সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। সমাজ যদি নিরাপত্তা না দেয়, তাহলে মানুষ বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ডে, অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়বে। 

খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপত্তা ইত্যাদি প্রয়োজন পূরণের জন্য সমাজের মানুষেরা একে অপরের উপর নির্ভরশীল। সমাজের প্রতিটি শ্রেণির মানুষ অপর শ্রেণির মানুষের উপর নির্ভর করে থাকে। এছাড়াও, সমাজের কারণেই মানুষের মাঝে ঐক্য এবং সহযোগিতামূলক আচরণ বিদ্যমান। 

সমাজ সম্পর্কে আমাদের মতামত

এতক্ষণ যাবত এই পোস্টে সমাজ কাকে বলে, সমাজ কত প্রকার ও কি কি, সমাজের উপাদান কয়টি ও কি কি, সমাজের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য এবং সমাজের দায়িত্ব ও কর্তব্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। পোস্টটি শুরু থেকে শেষ অব্দি পড়লে সমাজ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করতে পারবেন। সমাজ কীভাবে আমাদের জীবনে প্রভাব ফেলছে জানতে পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।

সমাজ সম্পর্কে যদি প্রশ্ন থেকে থাকে, তাহলে কমেন্ট করুন। আমরা আপনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। এতক্ষন ডিয়ার টেক ব্লগের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।


পোষ্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Comment