রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া – রোজা হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উপায়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা) পৃথিবীতে আগমনের পূর্বে থেকেই সকল ধর্মের জন্য রোজা ছিল। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হলো, যেমন হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর।
একটি হাদিসে পাওয়া যায় – “মানুষের সব কাজ তার নিজের জন্য কিন্তু রোজা ব্যাতিক্রম সেটা শুধু আমার জন্য” ( মুসলিম – ২৭৬০)। উক্ত হাদিস দ্বারা বুঝা যায় রোযা আল্লাহর কাছে কত প্রিয়। অন্যান্য যে কোনো ইবাদতের তুলনায় রোযা আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয়।
আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা জানাবো রোজার ফজিলত, রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া গুলো সম্পর্কে। পবিত্র রমজান মাসে নিয়ত গুলো অনেকেই মুখস্থ করতে পারেন না। আপনি চাইলে এখান থেকে স্ক্রিনসট নিয়ে রাখতে পারেন।
রোজার ফজিলত
মহান আল্লাহর কাছে অন্যান্য ইবাদতের চেয়ে রোজা অনেক বেশি প্রিয় হওয়ার কারণ আল্লাহই ভালো জানেন। অত্যান্ত ফজিলত ও রহমতপূর্ণ মাস হলো রোজার মাস। রোজা জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করার মাস। হাদিসে বলা হয়েছে – “রোজা হলো ঢাল ও জাহান্নামের আগুন থেকে বাচার মজবুত দূর্গ” ( মুসনাদে আহমদ – ৯২১৪)।
রোজা যেমন জাহান্নামের আগুন থেকে বাচায় তেমনি জান্নাতে যাওয়ার পথ তৈরি করে দেয়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা) বলেন – “ জান্নাতে একটি দরজা আছে। যার নাম রাইয়ান। শেষ বিচারের দিন শুধু মাত্র রোজাদারগন রাইয়ান দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। রোজাদারগন ব্যাতিত কেউই সেই দরজা থেকে প্রবেশ করতে পারবে না। সেদিন ঘোষনা করা হবে রোজাদারগন কোথায়? তখন তারা দাঁড়িয়ে যাবে এবং রাইয়ান দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে। যখন তাদের প্রবেশ করা শেষ হবে, তখন দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে। ফলে রোজাদার ছাড়া আর কেউ প্রবেশ করতে পারবে না”। ( বুখারি – ১৭৯৭)
রোজার নিয়ত / Roja Rakhar Niyot
পবিত্র রমজান মাসে সুস্থ প্রাপ্ত বয়স্ক সকল মানুষের জন্য রোজা ফরজ একটি ইবাদত। রমজানে সেহরির মাধ্যমে রোজা রেখে সন্ধায় ইফতার এর মাধ্যমে রোজা পূর্ণ করতে হয়। সেহরি খাওয়ার পরে রোজা রাখার নিয়ত করতে হয় আবার ইফতারি খাওয়ার পুর্বে ইফতারির দোয়া পাঠ করতে হয়।
আসলে নিয়ত হচ্ছে মনের ব্যাপার। আপনি যদি মনে মনে পন করেন যে আপনি রোজা রাখবেন, তাহলেই আপনার রোজার নিয়ত করা হয়ে যাবে। তবে আপনি চাইলে রোজার নিয়ত করতে পারেন।
📌 আরো পড়ুন 👇
যেহেতু বছর ঘুরে শুধু ১ মাসের জন্য রোজা ফিরে আসে তাই আমরা অনেকেই নিয়ত মুখস্থ করলেও সেটা ভুলে যাই। তাই নিচে আমরা রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া দিয়ে দিলাম –
রোজার আরবি নিয়ত
রোজার আরবী নিয়ত হলো –“ نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم”
রোজার নিয়তের বাংলা উচ্চারণ
অনেকেই আরবী দেখে পড়তে পারেন না। তাই নিচে দেখে নিন রোজার নিয়তের বাংলা উচ্চারণ – “নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম, মিন শাহরি রমাদানাল মুবারাক; ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু, ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম”।
রোজার বাংলা নিয়ত / Rojar Bangla Niyot
অনেকেই আছেন যারা আরবীতে নিয়ত পড়তে পারবেন না, আপনারা চাইলে আরবী নিয়ত শেখার আগে বাংলায় নিয়ত পড়তে পারেন।
রোজার বাংলা নিয়ত হলো – “ হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়্যত) করলাম। অতএব, তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোজা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকা কে) কবুল করো, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।
ইফতারের দোয়া / Iftarer Dua
রোজা রেখে সারাদিন পানাহার থেকে বিরত থাকার পরে আসে ইফতারের সময়। ইফতারের সময় খাওয়ার পূর্বে ইফতারের দোয়া পাঠ করতে হয়। নিচে আমরা ইফতারের দোয়ার আরবী, বাংলা ও বাংলা উচ্চারণ দিয়ে দিলাম –
ইফতারের আরবি দোয়া
ইফতারের দোয়া আরবী তে – “بسم الله اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ اَفْطَرْتُ”
ইফতারের দোয়ার বাংলা উচ্চারণ
ইফতারের দোয়ার বাংলা উচ্চারণ – “আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন”
ইফতারের বাংলা দোয়া / Iftarer Dua Bangla
আরবী উচ্চারণ মনে না থাকলে বাংলায় ইফতারের দোয়া করতে পারেন – “হে আল্লাহ! আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিজিজের মাধ্যমে ইফতার করছি”
📌 আরো পড়ুন 👇
রোজা ও ইফতার সম্পর্কে আমাদের মতামত
রোজার ফজিলত – আর্টিকেলে আমরা রোজার নিয়ত সম্পর্কেও আলোচনা করলাম। পবিত্র রমজান মাসে বেশি বেশি আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকুন। বেশি বেশি তওবাহ করুন। আল্লাহ তওয়াবা কারিকে ভালোবাসেন। আল্লাহ নিশ্চয়ই ভালো প্রতিদান দিবেন।
রোজার নিয়ত সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন। আমরা দ্রুত উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। এতক্ষন ডিয়ার টেক ব্লগের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।