সেরা ৫টি ফটো এডিট করার সফটওয়্যার

পোষ্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

5/5 - (1 vote)

ফটো এডিট করার সফটওয়্যার – মোবাইলে আমরা কম বা বেশি সকলেই প্রচুর ছবি তুলতে পছন্দ করি। কোনো অনুষ্ঠান কিংবা কোনো সুন্দর স্থানে ঘুরতে যাওয়ার মুহুর্ত গুলো কে ফ্রেম বন্দি রাখতে কে না চায়। তবে একটাই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় সেটা হলো হয় আমাদের ক্যামেরা ভালো না নয়ত সঠিক ভাবে ছবির ডিটেইলস আসে না। 

ছবি সুন্দর করার জন্য ব্যবহার করা হয় ফটো এডিটিং সফটওয়্যার। শুধু মাত্র যে ছবি সুন্দর করতেই ব্যবহার করা হয় বিষয়টি মোটেও ঠিক নয়। এইসব সফটওয়্যার দিয়ে ছবির ফরম্যাট পরিবর্তন করতেও ব্যাবহার করা যায়। প্লে স্টোরে দাড়ুন সব ফটো এডিটিং সফটওয়্যার রয়েছে। 

তবে বিপত্তি হলো কোন সফটওয়্যার কোন ধরণের এডিটিং এর জন্য ভালো। আপনি যদি সেলফি এডিট করেন তাহলে সেটার জন্য আপনাকে আলাদা সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে ভালো আউটপুট পেতে। তাই আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা জানাবো মোবাইলে সেরা ১০ টি ফটো এডিটিং সফটওয়্যার সম্পর্কে। যেগুলো আপনারা ফ্রি তে ইন্সটল করে ব্যবহার করতে পারবেন।

ফটো এডিট করার সফটওয়্যার

ফটো এডিট করার সফটওয়্যার ব্যবহার করার পূর্বেই আপনাকে সফটওয়্যার গুলোর টুলস এর কাজ সম্পর্কে জানতে হবে। যদি আপনি টুলস কাজ সঠিক ভাবে জানেন যে কোনো বাজে ছবি কে অনেক সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন। 

নিচে আমরা সেরা ৫টি ফটো এডিটিং সফটওয়্যার এর একটা তালিকা ও সাথে সফটওয়্যার গুলোর ফিচার গুলো সম্পর্কে তুলে ধরলাম –

১। Picsart – ফটো এডিটিং সফটওয়্যার

ফটো এডিট করার সফটওয়্যার

বিনামূল্যে ব্যবহার করার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি ফটো এডিটিং সফটওয়্যার হলো Picsart. এটা দিয়ে আপনি অনেক কাজ খুব সহজে করতে পারবেন। প্রচুর পরিমানে টেমপ্লেট থাকার কারনে মাত্র কয়েক মিনিটে ড্রাগ এন্ড ড্রপ করে সাজিয়ে নিতে পারবেন আপনার মনের মত ছবি। 

Picsart এর কয়েকটি বিশেষ ফিচার হলো –

এডিটিং টুলস: এই সফটওয়্যার প্রচুর পরিমানে টুলস রয়েছে। যেগুলো দিয়ে ছবি রোট্যাট, ক্রপিং, কালার গ্রেডিং,  ফিল্টার ইত্যাদি সহজেই ব্যবহার করা যায়।

ফিল্টার টুলস: আপনি কালার গ্রেডিং করতে অনেক সময় ব্যয় না করেও শুধু মাত্র কয়েকটা ক্লিক দিয়ে ফিল্টার ব্যবহার করতে পারবেন।

ড্রইং টুলস: এই সফটওয়্যার টি দিয়ে আপনি যে কোনো ধরণের ড্রয়িং করতে পারবেন। বিভিন্ন ধরণের Shape ব্যবহার করে অনেক কিছু তৈরি করতে পারবেন।

AI টুলস: AI টুলস ব্যবহার করে যে কোনো ধরণের ঝাপসা বা ঘোলা ছবি কে একদম পরিস্কার ও HD তে রুপান্তর করতে পারবেন। যে কোনো ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড এক ক্লিকে পরিবর্তন করা যাবে। 

এগুলো ছাড়াও অনেক ধরণের ফিচার আছে। তবে সব ফিচার ব্যবহার করার জন্য আপনাকে প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপসন কিনতে হবে।

২। Snapseed – ফটো এডিটিং সফটওয়্যার 

ফটো এডিট করার সফটওয়্যার

যে কোনো ছবির কালার গ্রেডিং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে শুরু করে ফেস শরিরের কালার সঠিক ভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় Snapseed সফটওয়্যার টি। ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তন করা সহ নানান ফিচার আছে এটাতে। নিচে এর কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট দিলাম –

এডিটিং টুলস: এই সফটওয়্যারে আপনি ২৯ টির মতো এডিটিং টুলস পাবেন। বিশেষ করে – Healing, Brush, HDR ইত্যাদি। 

ফেস পরিবর্তন: আমরা যখন ছবি তুলি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় আমাদের চেহারার মধ্যে লাইট এর পরিমান কম, আবার অনেক ক্ষেত্রে অন্য দিকে ঘুরে আছে। আসলে মুখমণ্ডল আপনি এখান থেকে বাকা করে সঠিক ভাবে বসাতে পারবেন। সাথে আরো বেশি উজ্জ্বল করে তুলতে পারবেন।

ইফেক্ট ও ফিল্টার: এই সফটওয়্যার প্রচুর পরিমানে ইফেক্ট ও ফিল্টার আছে। তবে অন্যদের থেকে এই সফটওয়্যার আলাদা হওয়ার কারণ হলো এখানে আপনি প্রতিটি ইফেক কে যে কোনো স্পট অনুযায়ী কমাতে পারবেন বা বাড়াতে পারবেন। 

যে কোনো ফরম্যাটের ছবি এটাতে সাপোর্ট করে। যদি আপনি RAW ইমেজ এডিট করতে চান সেটাও সহজেই করতে পারবেন।

৩। Lightroom – ফটো এডিটিং সফটওয়্যার

ফটো এডিট করার সফটওয়্যার

আপনি হয়ত নিশ্চয়ই Adobe কোম্পানির নাম শুনেছেন। সবচেয়ে জনপ্রিয় কম্পিউটার সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান এর তৈরি মোবাইল সফটওয়্যার এটি। এই সফটওয়্যার এর অসংখ্য টুলস এর মাধ্যমে আপনি অনেক ভালো ভাবে ফটো এডিট করতে পারবেন। চলুন দেখে নেই এর বেশ কিছু ফিচার –

RAW এডিট: এই সফটওয়্যার দিয়ে আপনি যে ছবি এডিট করবেন সেটার সাইজ কমাবে না। যেমন পূর্বেও ছিল এডিট করার পরেও একই কোয়ালিটি সম্পন্ন ছবি সেভ করতে পারবেন। 

এডজাস্টমেন্ট: মূলত ফটো তে কালার গ্রেডিং করার জন্য সবচেয়ে বেশি লাইট রুম সফটওয়্যার টি বেশি ব্যবহার করা হয়। তো আপনি যদি একদম সুন্দর ভাবে ব্যাকগ্রাউন্ড কে সুন্দর করতে চান তাহলে লাইট রুম আপনাকে ব্যবহার করতেই হবে। 

প্রিসেট: আপনি যে কোনো XML ফাইল প্রিসেট এখানে ইম্পোর্ট ও এক্সপোর্ট করতে পারবেন। একবার করা একটা প্রিসেট আপনি অন্যদের শেয়ার করতে পারবেন। তাহলে বার বার আপনাকে সব কিছু করতে হবে না। মাত্র এক ক্লিকেই কালার গ্রেডিং সম্পন্ন করতে পারবেন। 

এ ছাড়াও HDR ইমেজ ইফেক্ট সব নানান ইফেক্ট ও ফিল্টার সম্পন্ন এই সফটওয়্যার দিয়ে মনের মতো করে ছবি গুলো কে সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন।

৪। Photoshop Express – ফটো এডিটিং সফটওয়্যার

ফটো এডিট করার সফটওয়্যার

এডোবি এর তৈরি করা আরো একটি ফটো এডিট সফটওয়্যার এটি। আপনি যদি সিম্পল কিছু এডিট করতে চান সে ক্ষেত্রে এটা সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন। এটাতে ও অন্যান্য সফটওয়্যার এর মতো প্রচুর পরিমানে টুলস ও ইফেক্ট রয়েছে। এটা একদম সহজ ইন্টারফেস হওয়ায় যে কেউ চাইলে এটা ব্যবহার করতে পারবে। এই সফটওয়্যার এর কয়েকটি ফিচার হলো –

এডিটিং টুলস: ছবির এক্সপোজার,  ক্রপিং, টেমপ্লেট,  টেক্সট ইফেক্ট সহ অসং্খ্য এডিটিং টুলস আছে এই সফটওয়্যার টির মধ্যে। 

ফটো ইনহ্যান্স: ছবি যদি ঘোলা থাকে সেটা পরিস্কার করতে পারবেন। ফেস এর গ্লো সঠিক ভাবে ঠিক করে নিতে পারবেন। যার ফলে প্রফেসনাল একটা ভাব চলে আসবে ফটো তে। 

এ ছাড়াও ব্যাকগ্রাউন্ড চেঞ্জ করা সহ অনেক ধরণের টুলস আপনক ব্যবহার করতে পারবেন। তবে সব টুলস ব্যবহার করতে আপনাকে প্রিমিয়াম কিনতে হবে।

৫। Snapchat – ফটো এডিটিং সফটওয়্যার

ফটো এডিট করার সফটওয়্যার

আপনি যদি ট্রেন্ডিং ইফেক্ট দিয়ে ছবি এডিট করতে চান তাহলে আপনাকে ব্যবহার করতে হবে স্ন্যাপচ্যাট। সাধারণত যোগাযোগ এর মাধ্যম হিসেবেও কাজ করে স্ন্যাপচ্যাট। তবে এখানে ছবি এডিট করার জন্য প্রচুর পরিমানে ট্রেন্ডিং সব ইফেক্ট আছে।

যার কারনে আপনাকে কস্ট করে সময় নিয়ে এডিট করার ঝামেলা পোহাতে হবে না। আপনাকে শুধু ছবি তোলার পূর্বেই ইফেক্ট টি ব্যবহার করে নিতে হবে। আপনি যদি ট্রেন্ডিং এর সাথে গা ভাসাতে চান তাহলে এটা দিয়ে ফটো এডিট করতে পারেন। 

📌 আরো পড়ুন 👇

মূলত যারা সেলফি ছবি এডিট করতে চান তাদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো কাজ করবে। এখানে স্টিকার সহ অনেক গুলো ভাইরাল ফটো প্রিসেট ও ফিল্টার আছে। যেগুলো আপনি একদম বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারবেন। 

ফটো এডিট করার সফটওয়্যার সম্পর্কে আমাদের মতামত 

ফটো এডিটিং সফটওয়্যার আর্টিকেলে আমরা সেরা ২০২৪ সালের ০৫ টি সফটওয়্যার এর তালিকা দিলাম। যেগুলো আপনারা আপনাদের ফোনের গুগল প্লে স্টোরে সার্চ করলে পেয়ে যাবেন। সেখান থেকে ইন্সটল করে ব্যবহার করুন আর হয়ে যান একজন ফটো এডিটর।

ফটো এডিট করার সফটওয়্যার সম্পর্কে যদি প্রশ্ন থেকে থাকে, তাহলে কমেন্ট করুন। আমরা আপনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। এতক্ষন ডিয়ার টেক ব্লগের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।


পোষ্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Comment