কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা – ২০২৪ (অবিশ্বাস্য ৫ টি উপকারিতা)

পোষ্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

5/5 - (1 vote)

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে অনেক। আপনি যদি প্রতিদিন সকালে ভেজা কিসমিস খান, তবে কয়েক মাসের মাঝেই শরীরের ব্যাপক উন্নতি লক্ষ্য করবেন। এই পোস্টে আপনাদের সাথে কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

আপনি যদি কিসমিস প্রতিদিন সকালে ভিজিয়ে খেতে চান কিন্তু ভেজা কিসমিস খেলে কি হয় এবং ভেজানো কিসমিস এর স্বাস্থ্যউপকারিতাগুলো কি কি না জানেন তবে পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন। তো চলুন, পোস্টের মূল বিষয়ে ফিরে আসা যাক।

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা

আঙ্গুল ফল শুকিয়ে কিসমিস বানানো হয়। তাই তো আমরা সবাই শুকনো কিসমিস খাই। কিন্তু, আপনি কি আগে একবারও ভেজা কিসমিস খাওয়ার কথা চিন্তা করেছিলেন? শুকনো কিসমিস খাওয়ার থেকে ভেজা কিসমিস খাওয়ার মাঝে অনেক পুস্টিগুণ রয়েছে। ইসবগুলের ভুসি পানিতে ভিজিয়ে রেখে খেলে যেমন অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়, তেমনি কিসমিস ভিজিয়ে খেলেও অনেক স্বাস্থ্যউপকারিতা পাওয়া যায়।

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। নিচে কিছু উপকারিতা উল্লেখ করে দিলাম।

  • হজমশক্তি বাড়ায়
  • রক্তস্বল্পতা দূর করে
  • কোলেস্টেরল কমায়
  • হার্ট ভালো রাখে
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

চলুন, এবার কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।

হজমশক্তি বাড়ায়

কিসমিসে থাকা ফাইবার খাবার হজমে সাহায্য করে। ফাইবার একটি জটিল শর্করা যা শরীরে হজমের সময় প্রোবায়োটিকস তৈরি করে। প্রোবায়োটিকস হল উপকারী ব্যাকটেরিয়া যা হজম প্রক্রিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

📌 আরো পড়ুন 👇

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার ফলে ফাইবার আরও নরম হয়ে যায় এবং হজমে সহায়তা করে। তাই, কারও যদি হজমে সমস্যা থাকে, তবে প্রতিদিন কিসমিস ভিজিয়ে খেতে হবে। তাহলে, হজমশক্তি বৃদ্ধি পাবে পূর্বের তুলনায় কয়েক গুণ।

রক্তস্বল্পতা দূর করে

কিসমিসে থাকা আয়রন রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে। আয়রন হল রক্তের লোহিত রক্তকণিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। লোহিত রক্তকণিকা অক্সিজেন পরিবহন করে। কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার ফলে আয়রন শরীরে আরও সহজে শোষিত হয়। তাই, রক্তস্বল্পতা থাকলে অবশ্যই কিসমিস খেতে হবে। কিসমিস খাওয়ার সঠিক নিয়ম হচ্ছে এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে খাওয়া। এতে করে শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর হবে।

কোলেস্টেরল কমায়

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা

কিসমিসে থাকা ফাইবার কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। ফাইবার কোলেস্টেরলকে শরীর থেকে বের করে দেয়। কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার ফলে ফাইবার আরও কার্যকর হয়। প্রতি রাতে ১০-১২টি কিসমিস এক কাপ পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর, সকালে উঠে গ্লাসের পানি সহ কিসমিস গুলো খেয়ে নিতে হবে। এভাবে প্রতিদিন কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস করলে শরীরের কোলেস্টেরল কমবে কয়েক গুণ।

হার্ট ভালো রাখে

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা

কিসমিসে থাকা পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে। পটাসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ম্যাগনেসিয়াম রক্তনালীকে শিথিল করতে সাহায্য করে। কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার ফলে এই দুটি খনিজ শরীরে আরও সহজে শোষিত হয়। প্রতিদিন কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা এত বেশি যে এটি আপনার হার্ট ভালো রাখতে সক্ষম।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

কিসমিসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে ক্ষতিকর ফ্রি র‍্যাডিকেল থেকে রক্ষা করে। কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার ফলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আরও কার্যকর হয়। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য কিংবা রোগ থেকে প্রতিকার পাওয়ার জন্য প্রতিদিন ১০-১২টি কিসমিস খেতে হবে।

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার জন্য, রাতে ১০-১২ টি কিসমিস এক কাপ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে সেই কিসমিস পানিসহ খেয়ে নিন। এভাবে নিয়মিত কিসমিস ভিজিয়ে খেলে শরীরের অনেক উন্নতি হবে। কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতাগুলো তো ইতোমধ্যে উপরে উল্লেখ করে দিয়েছি। তাই, প্রতিদিন কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

এছাড়াও, আপনি চাইলে কিসমিসের সাথে ছোলা বুট ভিজিয়ে রাখতে পারেন। ছোলা বুট এবং কিসমিস ভিজিয়ে একসাথে খেলে আরও বেশি স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়। তবে, সবথেকে উত্তম পদ্ধতি হচ্ছে কিসমিস, ছোলা বুট এবং ইসবগুলের ভুসি এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রেখে সারারাত রেখে দিতে হবে। এরপর, সকালে উঠে পুরো গ্লাসের পানি খেতে হবে কিসমিস এবং ছোলা বুট সহ। এতে করে সব ধরণের উপাদান পাওয়া যায়।

সকালে উঠে খালি পেটে ভাবে খেতে পারলে কয়েক মাসের মাঝেই আপনার শরীরের অনেক উন্নতি লক্ষ্য করবেন। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, হজম শক্তি বৃদ্ধি, হার্টের রোগ থেকে মুক্তি, রক্তস্বল্পতা দূর করা সহ আরও অনেক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব এভাবে প্রতিদিন খেলে।

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার সময় অবশ্যই কিসমিস ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। কারণ, শুকনো অবস্থায় এগুলোতে ময়লা সহ অনেক কিছু পড়তে পারে। ভালো করে ধুয়ে নিয়ে পানিতে ভিজিয়ে খেতে পারেন।

সকালে খালি পেটে কিসমিস খাওয়ার নিয়ম

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো সময় হল সকালে খালি পেটে খাওয়া। এতে কিসমিস এবং এর ভিতর থাকা পুষ্টি উপাদানগুলো শরীরে আরও সহজে শোষিত হয়। তবে, আপনি চাইলে দুপুরের খাবারের আগে বা রাতের খাবারের পরেও কিসমিস ভিজিয়ে খেতে পারেন। কিন্তু, কিসমিস সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খেলে কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতাগুলো সব পাওয়া যায়।

প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত

কিসমিস একটি পুষ্টিকর খাবার। এতে ফাইবার, প্রোটিন, আয়রন, পটাসিয়াম, কপার এবং ভিটামিন বি৬ রয়েছে। এই পুষ্টি উপাদানগুলো শরীরের বিভিন্ন কাজে সহায়তা করে। কিসমিস ভিজিয়ে খেলে এর পুষ্টি উপাদানগুলো শরীরে আরও ভালোভাবে শোষিত হয়। এছাড়াও, কিসমিস ভিজিয়ে খেলে হজমশক্তি বাড়ে, রক্তস্বল্পতা দূর হয়, কোলেস্টেরল কমে, হার্ট ভালো থাকে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং ওজন কমে।

তবে, কিসমিস পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। পুষ্টিবিদদের মতে, দিনে ৪০ থেকে ৫০ গ্রাম কিসমিস খাওয়া যেতে পারে। অর্থাৎ, আপনি চাইলে প্রতিদিন রাতে ১০-১২টি কিসমিস পানিতে ভিজিয়ে রাখতে পারেন এবং সকালে উঠে খালি পেটে পানি সহ কিসমিসগুলো খেতে পারেন।

শুকনো কিসমিস খেলে কি হয়

শুকনো কিসমিস খেলে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়। শুকনো কিসমিস বা ভেজা কিসমিসের একই উপাদান থাকে। তবে শুকনো কিসমিস খাওয়ার থেকে ভেজানো কিসমিস খাওয়ায় বেশি উপকারিতা পাওয়া যায়। শুকনো কিসমিস খেলে রক্তচাপ কমে, হার্ট ভালো থাকে, হজম শক্তি বৃদ্ধি হয়, রক্ত স্বল্পতা কমে যায় এবং আরও অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়।

শুকনো কিসমিস খাওয়ার উপকারিতার থেকে কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি। তাই, রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে কিসমিস খাওয়া উচিত।

দুধ কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা

দুধ এবং কিশমিস উভয়ই পুষ্টিকর খাবার। দুধে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে। কিসমিসে ফাইবার, আয়রন, পটাসিয়াম এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে। দুধ এবং কিসমিস একসাথে খেলে অনেক উপকার হয়। এই দুটি খাবারের পুষ্টি উপাদানগুলো একে অপরের পরিপূরক।

তাই, দুধে কিসমিস ভিজিয়ে রেখে সকালে উঠে খালি পেটে খেতে পারেন। এতে করে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যাবে। প্রতিদিনের ক্যালরি চাহিদার অনেকাংশ পূরণ হবে এই খাবার খেলে। তবে, আপনি চাইলে আরেকটি কাজ করতে পারে। দুধের মাঝে কিসমিস, ছোলা বুট, ইসবগুলের ভুসি ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খেতে পারেন।

📌 আরো পড়ুন 👇

এতে করে সবগুলো খাবারের পুষ্টি উপাদান পাবেন। প্রতিদিনের ক্যালরি চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি এগুলো আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে এবং বিভিন্ন রোগ থেকে প্রতিকার মিলবে এই খাবারগুলো খেলে।

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের মতামত

আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করেছি। এছাড়াও, কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম এবং কখন কিসমিস খেতে হবে এসব বিষয় নিয়েও আলোচনা করেছি। এমন আরও তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইট প্রতিনিয়ত ভিজিট করুন। পোস্ট সম্পর্কে মতামত বা প্রশ্ন জানাতে পারেন কমেন্ট বক্সে।

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে যদি প্রশ্ন থেকে থাকে, তাহলে কমেন্ট করুন। আমরা আপনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। এতক্ষন ডিয়ার টেক ব্লগের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।


পোষ্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Comment