দুবাইতে প্রথম সপ্তাহে ২০,০০০ অবৈধ প্রবাসী সাধারণ ক্ষমা চেয়েছে

সংযুক্ত আরব আমিরাত অ্যামনেস্টি (সাধারণ ক্ষমা) স্কিম চালু করার পর প্রথম সপ্তাহে দুবাইতে প্রায় ২০,০০০ আবেদন পেয়েছে।

রেসিডেন্সি অ্যান্ড ফরেনার্স অ্যাফেয়ার্সের জেনারেল ডিরেক্টরেট (জিডিআরএফএ) জানিয়েছে যে ৯৮ শতাংশের বেশি আবেদন ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পরিচালনা করা হয়েছে। ৯০ শতাংশের বেশি আবেদন অনলাইনে করা হয়েছে।

উল্লেখ্য পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দুই মাস এ সাধারণ ক্ষমার সুযোগ থাকছে। বিভিন্ন কারণে অনিয়মিত, নথিবিহীন বা অবৈধভাবে বসবাসকারী যাদের ভিসার মেয়াদ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে তারা এ সাধারণ ক্ষমার সুযোগ পাচ্ছেন। খালিজ টাইমস

দেশটিতে অবৈধ হয়ে পড়া রেসিডেন্স ভিসাধারী বাংলাদেশিদের বিনা জেল জরিমানায় অবস্থান বৈধকরণ কিংবা দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য ঘোষিত সাধারণ ক্ষমা বিষয়ে নানা দিক নির্দেশনা দূতাবাস থেকে দেয়া হয়েছে।

কনসাল জেনারেল বি এম জামাল হোসেন জানান, এ সেবা পেতে দুবাইয়ের ভিসাধারীদের আল-আবির ইমিগ্রেশনে এবং আমিরাতের অন্যান্য অঞ্চলে ভিসাধারীদের সংশ্লিষ্ট প্রদেশের অভিবাসন কেন্দ্রে যেতে হবে। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী আমিরাত সরকার অনুমোদিত টাইপিং তাসহিল বা আমের সেন্টারে যেতে হবে।

দেশে যাওয়ার জন্য এক্সিট পারমিট পেতে মূল পাসপোর্ট এবং দূতাবাস বা কনস্যুলেট থেকে ট্রাভেল পারমিট লাগবে। ভিসাবিহীন থাকার জন্য কাউকে সাধারণ ক্ষমা চলাকালে কোন জরিমানা দিতে হবে না, তবে ডকুমেন্ট প্রসেসিং-এর জন্য নির্ধারিত ফি দিতে হবে।

যারা সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করেছেন, তারা পাসপোর্ট বা বাংলাদেশি হিসেবে কোন প্রমাণ বা সংশ্লিষ্ট দেশের ভিসার প্রমাণ ও আগের ভিসার তথ্য দিয়ে কনস্যুলেট বা দূতাবাস থেকে ট্রাভেল পারমিট সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট ইমিগ্রেশনে এক্সিট পারমিট নিতে পারবেন।

ভিসা নিয়মিত করা ও দেশে যাওয়ার প্রেক্ষিতে এক্সিট পারমিটের জন্য নির্ধারিত ফি দিতে হবে। এক্সিট পারমিট পাওয়ার পর ১৪ দিন তার মেয়াদ থাকবে। সংশ্লিষ্ট ইমিগ্রেশনে বায়োমেট্রিক্স স্ক্যান করার পর এক্সিট পারমিট ইস্যু করা হবে।

সংশ্লিষ্ট ইমিগ্রেশনে ভিসা রেকর্ড পরীক্ষা করার পর কেউ যদি পলাতক বা নিয়োগকর্তা কাছ থেকে পলাতক (তা’মিম) হয়ে থাকেন, তাহলে দেশে যাওয়ার জন্য এক্সিট পারমিট অথবা ভিসা নিয়মিত করার জন্য পুলিশের ছাড়পত্রের প্রয়োজন হবে। তবে সাধারণ ক্ষমা চলাকালীন এক্সিট পারমিট নিয়ে দেশে গেলে কোনো প্রকার নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে না। সাধারণ ক্ষমার সুবিধা পেতে আদালত থেকে ছাড়পত্র নিতে হবে।

যেসব প্রবাসীদের বিরুদ্ধে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ আছে তারা কি সাধারণ ক্ষমার জন্য আবেদন করতে পারবেন? সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে কনসাল জেনারেল বলেন, “মামলার ধরনের উপর তা নির্ভর করবে, এক্ষেত্রে পলাতক বা তা’মিম রিপোর্ট আপডেট করে সংশ্লিষ্ট ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ দেশে যাওয়ার জন্য এক্সিট পারমিট ইস্যু করবেন।”

আবেদনকারী কীভাবে তার পাসপোর্ট পুনরুদ্ধার করতে পারবেন, যা স্পন্সর কর্তৃক ইমিগ্রেশনে জমা দেওয়া হয়েছে? এ বিষয়ে তিনি বলেন, “সংশ্লিষ্ট ইমিগ্রেশনে যোগাযোগ করা হলে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদনকারীকে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ পাসপোর্ট দেবেন। ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ কিছু সংখ্যক পাসপোর্ট কনস্যুলেটে বা দূতাবাসে পাঠিয়েছে যা কনস্যুলেটে বা দূতাবাসে যোগাযোগ করে সংগ্রহ করা যাবে।”

আবেদনকারী জরিমানা মওকুফ ও ভিসা নিয়মিতকরণ কার্যক্রম শেষ করে কি সরাসরি কর্মসংস্থান ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন? এর উত্তরে জামাল হোসেন বলেন, “সরাসরি সংশ্লিষ্ট ইমিগ্রেশনে গিয়ে পাসপোর্ট ও ভিসা বা পরিচয়পত্র দাখিল করে প্রসেসিং ফি দিয়ে জরিমানা মওকুফ করা হবে এবং ছয় মাস মেয়াদি জব সিকার্স ভিসা ইস্যু করা হবে।”

আমিরাতে বাংলাদেশিদের সাধারণ ভিসা হচ্ছে না। এক্ষেত্রে সাধারণ ক্ষমার সুযোগ প্রত্যাশীদের জন্য করণীয় সম্পর্কে কনসাল জেনারেল বলেন, “সাধারণ ক্ষমা চলাকালীন সাময়িকভাবে নতুন ভিসা দেওয়া বন্ধ থাকবে। অনিয়মিত/আনডকুমেন্টেড/অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশি যাদের ভিসার মেয়াদ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে তারা সাধারণ ক্ষমার সুযোগ পাবেন। যারা ভিজিট ভিসায় এসেছেন তারাও সাধারণ ক্ষমা চলাকালীন সময়ে বৈধ হওয়ার সুযোগ পাবেন।”

পোষ্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Comment